খেজুরের রসের উপকারিতা | খেজুর রস খাওয়ার উপকারিতা
পুষ্টিগত দিক থেকে খেজুর রসের উপকারিতা অনেক। গ্রাম বাংলা বা অধুনা শহরের শীতকালীন কৈশোরের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে খেঁজুরের রসের মাদকতা। শীতের কুয়াশামাখা সকালে গাছ থেকে নামানো সদ্য তাজা এক গ্লাস খেজুরের রসের আস্বাদন যিনি করেছেন, তিনিই জানেন এর তুলনা অন্য কোনো পানীয়ের সঙ্গেই করা বৃথা।
তবে শহুরে আধুনিকতার আঁচ গ্রামে আসতে শুরু হতে, গ্রামেও কমছে খেজুর গাছের সংখ্যা। সেই সঙ্গে কমছে ‘গাছি’ বা খেজুরের রস সংগ্রহ করার মানুষের সংখ্যা। আগের দিন বিকালে খেজুর রসের চাষি বা ‘গাছি’ গাছে উঠে কলসি বেঁধে আসে রস সংগ্রহের জন্য। সারা রাত সেই কলসিতে রস জমা হয় এবং ভোরবেলা বা খুব সকালে তা নামানো হয়। সাধারণত অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত খেজুর রস সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। এই রস কাঁচা বা গরম করে খাওয়া হয়। এই খেজুরের রসকে ফুটিয়েই খেজুরের গুড় বা পাটালি তৈরি করা হয়, যা খাদ্যরসিক বাঙালির পিঠে-পুলি-পায়েসের অন্যতম একটি উপাদান।
শুধু স্বাদেই নয়, খেজুরের রসের জনপ্রিয়তা এর পুষ্টিমূল্য বা উপকারিতার জন্যও। খেজুর রস প্রচুর খনিজ ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ।
খেজুরের রসের উপকারিতা
১) খেজুরের রসে দ্রবীভূত শর্করা বা গ্লুকোজের পরিমান কমবেশি ১৫% থেকে ২০% এবং এতে আছে প্রচুর প্রোটিন, সহজপাচ্য ফ্যাট এবং খনিজ বা মিনারেল। এত পুষ্টিগুণসম্পন্ন এবং জলীয় অংশ বেশি হওয়ার কারণে খেজুরের রসকে প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংকও বলা হয়ে থাকে।
২) পরীক্ষা করে দেখা গেছে খেজুরের রস থেকে তৈরি গুড়ে প্রচুর পরিমান লৌহ বা আয়রন থাকে। ফলে খেজুরের রস খেলে বা প্রতিদিন অল্প পরিমাণে খেজুরের গুড় খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক থাকে, অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ হয়।
৩) খেজুরের রসে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম থাকায়, খেজুরের রস বা গুড় পেশীকে শক্তিশালী করতে বিশেষ কার্যকরী। তাছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম, যার ঘাটতির কারণে আমাদের অবসন্ন বা ক্লান্তি ভাব আসে। তাই খেজুরের রস বা গুড় সেবনে শারীরিক দুর্বলতা দূর হয়ে কর্মস্পৃহা ফিরে আসে।
৪) প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ হওয়ায় খেজুরের রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, শীতের দিনে শরীর গরম রাখে। ফলে সর্দিকাশির হাত থেকে বাঁচায়।
৫) অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে বা ওজন কমাতে চিনির পরিবর্তে খেজুরের গুড় খাওয়া যেতে পারে – এক্ষেত্রে এর পরিবর্ত হিসাবে অন্য কিছু ভাবা যায় না। পর্যাপ্ত পটাশিয়াম থাকায় শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আরও পড়ুন – মোটা হওয়া বা ওজন বৃদ্ধির কারণ
৬) বিশেষজ্ঞদের মতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও খেজুরের রসের কার্যকরী ভূমিকা আছে। খেজুরের রস থেকে উৎপাদিত গুড় অনিদ্রা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭) খেজুরের রস আমাদের হজমে সাহায্যকারী উৎসেচকগুলির কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়। আপনি যদি প্রতিদিন খাওয়ার পর সামান্য পরিমাণ খেজুরের গুড় খান তাহলে হজম তাড়াতাড়ি হবে।
খেজুর রস খাওয়ার আগে কিছু সাবধানতা :
যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁরা খেজুরের রস বা গুড় না খাওয়াই ভালো। তবে এ ব্যাপারে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
খেজুরের রস ভোর বা সকালে খাওয়াই ভালো। দিনের আলো বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি ক্রমশ গেঁজে ওঠে এবং অম্লত্ব বৃদ্ধি পায়, তা পান করলে বমি হতে পারে এবং শরীরের জন্যও ক্ষতিকর।
খেজুরের রসের কলসি বাঁধার সময় কলসির মুখ জাল দিয়ে ঢেকে দেওয়া উচিত। অনেক সময় বাদুড় কলসির ভিতর মুখ ঢুকিয়ে রস খায়। এ থেকে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই খেজুরের রস ফুটিয়ে খাওয়া বেশি নিরাপদ।
কোনো জিনিসই অতিরিক্ত ভালো নয়, তা সে যতই ভালো হোক না কেন! খেজুরের রস এক বা দু’গ্লাস পান করাই যথেষ্ট। এর বেশি পান না করাই ভালো।
জেনে নিন খেজুরের রসের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
শীত এলেই মনে হয় খেজুরের রস খাওয়ার কথা। শহরের দিকে এ রস পাওয়া সত্যি বিরল। গ্রামাঞ্চলেও আজকাল সহজে দেখা মেলে না এ রসের।
খেজুরের রস কিন্তু বেশ উপকারী পানিও আমাদের জন্য। খেজুরের রসে প্রচুর এনার্জি বা শক্তি রয়েছে। এতে জলীয় অংশও বেশি। এই রসকে প্রাকৃতিক ‘এনার্জি ড্রিংক’ বলা যেতে পারে। এতে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি থাকে।
খেজুরের রস কাঁচা খাওয়া যায়, আবার জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করেও খাওয়া যায়। গুড়ে আয়রন বা লৌহ বেশি থাকে এবং হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে।
যারা শারীরিক দুর্বলতায় ভোগেন, কাজকর্মে জোর পান না, খেজুরের রস তাঁদের জন্য দারুণ উপকারী। খেজুরের রস প্রচুর খনিজ ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। এতে ১৫-২০% দ্রবীভূত শর্করা থাকে।
খেজুরের গুড় আখের গুড় থেকেও বেশি মিষ্টি, পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। খেজুরের গুড়ে প্রোটিন, ফ্যাট ও মিনারেল সবই রয়েছে। যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারা খেজুরের রস এড়িয়ে যাবেন।
পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ
আমাদের পোস্ট টি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে অথবা এই পোস্ট থেকে আপনি যদি উপকৃত হন, তাহলে আপনার একটি মূল্যবান কমেন্ট করেদিন,
এতে আমরা আরো অনুপ্রাণিত হতে পারি।
আপনার একটি কমেন্ট আমাদের আরো বেশি উৎসাহিত করে
Thank You
No comments:
Post a Comment