মধু খাওয়ার উপকারিতা । প্রকারভেদ ও খাবার পদ্ধতি]
মধু খাওয়ার উপকারিতা
মধু আসলে কী ?
মধু হল আসলেএক ধরণের মিষ্টি এবং ঘন তরল পদার্থ, যা মৌমাছি ও নানারকম পতঙ্গ বিভিন্ন রকমের ফুলের নির্যাস সংগ্রহ করে মৌচাকে জমা করে। এটি খুব উন্নত ওষধিগুণ সম্পন্ন একটি ভেষজ তরল। বর্তমানে চিনির বহুল প্রয়োগ সত্ত্বেও বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তুতিতে মধুর ব্যবহার জনপ্রিয়। অধুনা নারীদের রূপচর্চায় মধুর ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। মধুর বিশেষ গুণ হল এটি সহজে নষ্ট হয়ে যায় না। এমনকি কয়েকশো বছরেও না। মধু খুব ঘন হওয়ায় কোনো জীবানু মধুর ভেতরে এক ঘণ্টার বেশি বাঁচতে পারে না ।
মধুতে মানুষের শরীরে প্রয়োজনীয় প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান মজুত থাকে।
ফুলের পরাগ নিঃসৃত মধুতে পাওয়া যায়-
৩৪ থেকে ৪২ শতাংশ ফ্রুক্টোজ,
০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ
এবং ৫-১২ শতাংশ মন্টোজ।
আরো থাকে ২০-২২ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড,
২৭-২৮ শতাংশ খনিজ লবণ
আর ১০-১১ ভাগ এনকাইম।
মধুতে প্রোটিন আর ফ্যাট থাকেনা । ১০০ গ্রাম মধুর তাপনমূল্য প্রায় ২৮০ ক্যালরির মত। মধুর মধ্যে থাকে আয়োডিন, জিংক ও কপার প্রভৃতি খনিজ সহ ভিটামিন বি এর বিভিন্ন উপাদানগুলি। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হল মধুতে কোনো কোলস্টেরল থাকে না।
মধুর প্রকারভেদ :-
মধু নানা প্রকারের হয়ে থাকে, তবে সব থেকে জনপ্রিয় প্রকারের মধুগুলির নাম এখানে দেওয়া হল :-
ব্লবেরি মধু :– নীল জামের নির্যাস থেকে সংগ্রহ করা এই মধু ইংল্যান্ড ও মিকিগানে খুব বিখ্যাত।
অরেঞ্জ ব্লসম মধু :- কমলা লেবু থেকে সংগ্রহ করা এই জাতীয় মধু ফ্লোরিডা ও ক্যালিফোর্নিয়া অঞ্চলে খুব বিখ্যাত।
আলফালফা মধু :- ছোট ছোট ফুল গাছের থেকে মৌমাছির দ্বারা পরাগিত হয়ে থাকে এই জাতীয় মধু।
ক্লোভার মধু :- ক্লোভার গাছের থেকে মৌমাছির দ্বারা চয়ন করা মধু ক্লোভার মধু নামে পরিচিত।
ঘরে সংরক্ষিত মধু যে সমস্ত উপকারে লাগে তার তালিকা করতে হলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে। তার মধ্যে সবচেয়ে বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয় বিষয়গুলি নিম্নরূপ-
মধু খাওয়ার উপকারিতাগুলি হলঃ –
২। ওজন কমায়:-
ওজন বেড়ে যাচ্ছে ? কিংবা বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলতে চান ? অথবা শরীরের স্লিম ভাব ধরে রাখতে চান ? তাহলে আপনার সবচেয়ে কার্যকর ভেষজ খাবার হল মধু। সকালবেলা খালি পেটে কুসুম গরম জলের সঙ্গে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খান। দেখুন ম্যাজিকের মতো কাজ করে কিনা ।
৩। মুখের দুর্গন্ধ দূর করে :-
মুখের ভিতরে নানা খদ্যদ্রব্য আটকে থাকে আর সেসব থেকে নানা জীবাণু ক্রিয়া করে। অনেকসময় মুখের ভিতরে আলসার বা ঘা হয়ে থাকে। কখনো মাড়ির গোড়া থেকে পুঁজ বেরোয়। যদি আপনি নিয়মিত মধু সেবন করেন তাহলে মুখের সেইসব সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পেতে পারেন। আর মুখের দুর্গন্ধ অচিরেই পালিয়ে গেছে দেখবেন।
মধু উষ্ণতা বৃদ্ধি করে এবং রক্ত সঞ্চালন সুস্থ ও স্বাভাবিক করে। ফলে হৃদপেশি মজবুত করে হৃদপিণ্ডের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় । রোজ এক চামচ মৌরির গুড়োর সঙ্গে এক চামচ মধু খেয়ে যান। এইভাবে নানা হৃদরোগের হাত থেকে দূরে থাকা সম্ভব হবে।
সামান্য গোলমরিচের গুঁড়োর সঙ্গে আদা মিশিয়ে মধুর সঙ্গে দিনে অন্তত বার তিনেক সেবন করলে হাঁপানির মতো রোগের যন্ত্রণা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
আমাদের ঠাকুমা দিদিমারা সর্দি কাশিতে বাসক পাতা, তুলসি পাতা ইত্যাদির সঙ্গে আদা মিশিয়ে মধুর সঙ্গে খেতে বলতেন। এটা যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে। বুকের কফ পরিষ্কার করতে এর তুলনা নেই।
হজমের সমস্যা ! গুরুপাক কোনো খাবারের আগে Aciloc খাবার বদলে এক চামচ মধু খেয়ে নিন। দেখবেন পেটের অ্যাসিড ভাব দূর হয়ে ভালো হজম হয়ে গেছে। এছাড়া রোজ খালি পেটে গরম জলের সঙ্গে মধু খাবার অভ্যাস করলে গ্যাস অ্যাসিডিটি দূর হয়ে ভালো হজম হবার অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।
যাকে আমরা গলাভাঙ্গা বলি সেটা আসলে স্বরভঙ্গ । বেশি ঠাণ্ডা লাগলে কন্ঠ নালীর স্বরতন্ত্র আঘাতপ্রাপ্ত বা আক্রান্ত হলেই এরকমটা হয়ে থাকে। তাই এরকম হলে সৈন্ধব লবণ বা Rock salt এর সঙ্গে আমলকি,পিপুল, গোল মরিচ ইত্যাদির সঙ্গে মধু মিশিয়ে এক চা চামচ করে খেলে কফ যেমন দূর হবে তেমনি ও স্বরভাঙ্গাও দ্রুত কমে যাবে।
শরীরের পাশাপাশি যৌন ক্ষমতা ধরে রাখতে মধুর তুলনা নেই। ধাতু দুর্বলতা কিংবা যৌন ক্ষমতা কমতে থাকার হাত থেকে উন্নত অবস্থায় যেতে চাইলে নিয়মিত মধু সেবন করা দরকার।
লেবুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিয়মিত খেলে রক্ত পরিষ্কার থাকে। এটা অভ্যাস করতে পারলে শরীরের অনেকগুলি দিকে উপকার পাওয়া যাবে।
লোকে বলে মধু খেলে শরীর গরম থাকে । কথাটি খুব সত্যি। এক কাপ গরম জলে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে শরীর গরম হয়। শীতের সময় এটি খুবই কার্যকরি। কেননা মধুর মধ্যে থাকা উচ্চ ক্যালরি শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।
যে কোনো ভাবেই যদি নিয়মিত মধু সেবন করা যায় তাহলে বাতের ব্যাথার মত গাঁটের ব্যাথা থেকে খুব আরাম পাওয়া যায়। তবে মনে রাখতে হবে মধু খাবার পরিমাণ যেন নির্দিষ্ট পরিমাণে এবং তা নিয়ম করে খাওয়া হয়।
মধুর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের পেশিকে যেমন দৃঢ় ও শক্তিশালী করে। তেমনি দেহের নানা ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
মধুর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট , বিভিন্ন ভিটামিন আর মিনারেল সমূহ রক্ত পরিষ্কার করার পাশাপাশি ফুসফুসের কার্য ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
দাঁতকে ও দাঁতের গোড়া মজবুত করতে হলে নিয়মিত মধু সেবন করা দরকার। বিভিন্ন জীবানু মধুর সংস্পর্শে ধ্বংস হয়ে যায়।
মধুর মধ্যে থাকা কপার, লৌহ ও ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি উপাদানগুলি রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে রক্তাল্পতা দূর করে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে রক্তাল্পতার সমস্যা বেশি হবার সম্ভাবনা থাকে। তাই তারা নিয়মিত মধু সেবন করলে রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে যাবার সম্ভাবনা দূর হয়।
কুসুম গরম দুধের সঙ্গে মধু সেবন করলে তারুন্য শক্তি যেমন বজায় থাকে তেমনি নিয়মিত খেলে যৌনক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। তাই যুগ যুগ ধরেই মধু খাবার প্রচলন রয়েছে।
মধুর গুনের মধ্যে থাকা আরেকটি গুন , যা হয়তো অনেকেই জানেন না , সেটা হল অনিদ্রাভাব দূর করার ক্ষমতা। রাতে ঘুমানোর আগে যদি এক গ্লাস হালকা গরম জলের সঙ্গে দুই চামচ মধু মিশিয়ে পান করা যায় তাহলে খুব গভীর ঘুম হবে এবং অনিদ্রার সমস্যা দূর হবে ।
গা গোলানো বা বমি বমি ভাব হলে এক কাপ ঠাণ্ডা জলে এক চামচ মধু আর সামান্য জোয়ানের গুড়ো মিশিয়ে খেলে সঙ্গে সঙ্গে বমি ভাব দূর হয়।
মধু যেহেতু উত্তম একটি ভেষজ , আর এর মধ্যে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের টান টান অবস্থা ধরে রাখার পাশাপাশি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখে। তাই মধু বুড়িয়ে যাওয়া থেকে দূরে রাখে। বর্তমানে তাই রূপচর্চায় মধুর জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
মধু খাওয়ার ব্যাপারে সাবধানতা :-
কোনোকিছুই অতিরিক্ত ভালো নয় । তাই নিয়মিত অল্প অল্প করে না খেয়ে একেবারে বেশি পরিমাণ মধু খেলে শরীরে ক্ষতির সম্ভাবনা। আর শরীরে যদি গুরুতর কোনো রোগ থেকে থাকে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনেই মধু সেবন করতে হবে। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হল মধুতে ভেজাল। ভেজাল মধু খাবার থেকে সাবধান থাকতে হবে ।
খাঁটি মধু কীভাবে চিনবেন :-
মধু কেনার সময় বড় সমস্যাটি হল , বিক্রেতা লোভে পড়ে মধুতে নানারকম ক্যামিক্যাল বা প্রাকৃতিক ভেজাল মেশায়। তাই আসুন জেনে নিই আসল মধু কীভাবে চেনা যায়:-১। খ্যাতনামা বিশ্বস্ত কোনো কোম্পানির মধু কিনবেন , যা আগে আপনার খেয়ে পরখ করাই আছে।
২। খাঁটি মধু হবে আঠালো চটচটে। চামচে করে তুলে ধরলে লম্বা সুতোর মতো নীচে পড়তে থাকবে।
৩। আঙ্গুলে এক ফোঁটা , মধু নিয়ে উল্টো করে ধরে দেখুন খুব দ্রুত পড়ে যায় কি না। আসল মধু হলে দ্রুত ফোঁটা ফোঁটা পড়ে যাবে না।
৪। মধু জলে খুব দ্রুত মিশে যায় । অন্য ভেজাল থাকলে জলের নীচে গুঁড়ো গুঁড়ো থিতিয়ে থাকবে।
৫। একটা পাত্রে মধু নিয়ে ফ্রিজে কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে দেখুন কোনো রকম জমাট বাঁধে কিনা। খাঁটি মধু ফ্রিজের ঠাণ্ডায় জমাট বাঁধবে না ।
আশা করি বন্ধুরা আজকের আর্টিকেল থেকে আমরা ভালো ও দরকারি কিছু শিখতে পারলাম । লেখাটি একটুও যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আবশ্যই আপনার পরিজনদের শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমাদের ফেসবুক পেজটি লাইক করে সঙ্গে থাকুন আর অপেক্ষা করুন এরকম আরো সুন্দর কিছু লেখার জন্য।
পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ
আমাদের পোস্ট টি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে অথবা এই পোস্ট থেকে আপনি যদি উপকৃত হন, তাহলে আপনার একটি মূল্যবান কমেন্ট করেদিন,
এতে আমরা আরো অনুপ্রাণিত হতে পারি।
আপনার একটি কমেন্ট আমাদের আরো বেশি উৎসাহিত করে
Thank You
Sandstone Casino
ReplyDeleteAll your favourite games & live table games. 메리트 카지노 쿠폰 Whether it's slots, poker or 온카지노 bingo, Sandstone Casino 샌즈카지노 is the place for you. Play slots, table games, or hit the jackpot!